NotesGeneral Knowledge Notes in Bengali

বাংলাদেশের বিজয় দিবস – ১৬ই ডিসেম্বর

Victory day of Bangladesh

বাংলাদেশের বিজয় দিবস :

প্রতিবছর ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় দিবস পালন করা হয়, এই দিনটি বাংলাদেশের ন্যাশনাল হলিডে গুলির মধ্যে একটি। চলো আজ আমরা জেনে নিই এই পবিত্র দিনটির কিছু ইতিহাস সম্পর্কে। 

বিজয় দিবসের ইতিহাস :

  • ২৬ মার্চ ১৯৭১-এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়, যখন পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাঙালি বেসামরিক, ছাত্র, বুদ্ধিজীবী এবং সশস্ত্র কর্মীদের বিরুদ্ধে অপারেশন সার্চলাইট নামে একটি সামরিক অভিযান শুরু করে। 
  • বাংলাদেশের ‘জাতির জনক’ শেখ মুজিবুর রহমান ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ঘোষণা করেন ও তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনী দেশের মুক্তিযুদ্ধে লিপ্ত হয়। পরে ভারত ৩রা ডিসেম্বর বাংলাদেশের হয়ে যুদ্ধে যোগদান করে। 
  • ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ বাহিনী ভারতের সহযোগিতায় বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধে পাকিস্তান বাহিনীকে পরাজিত করে, এই উদ্দেশ্যে প্রতিবছর ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় দিবস পালিত হয়। 
  • পাকিস্তানি বাহিনীর কমান্ডিং অফিসার জেনারেল আমীর আবদুল্লাহ খান নিয়াজী তার বাহিনী নিয়ে বাংলাদেশের মিত্রবাহিনীর কাছে ঢাকায় আত্মসমর্পণ করেন, যা ৯ মাসব্যাপী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের গণহত্যার সমাপ্তি চিহ্নিত করে এবং বাংলাদেশ ইসলামিক রিপাবলিক অফ পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন একটি রাষ্ট্র হিসাবে মর্যাদা লাভ করে। 
  • এই দিনটিতে সারা ভারত জুড়েও “বিজয় দিবস” হিসাবে পালন করা হয় যুদ্ধে শহীদ বাংলাদেশী এবং ভারতীয়দের সম্মান জানাতে। 
  • লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী এবং ভারতীয় ও বাংলাদেশ বাহিনীর যুগ্ম কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা রেসকোর্সে হাজার হাজার উল্লাসিত জনতার মধ্যে এই দলিলে স্বাক্ষর করেন।
  • লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী এবং ভারতীয় ও বাংলাদেশ বাহিনীর যুগ্ম কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা ঢাকার রেসকোর্সে হাজার হাজার উল্লাসিত জনতার মাঝে পাকিস্তানের আত্মসমর্পনের দলিলে (Instrument of Surrender) স্বাক্ষর করেন।
  • আত্মসমর্পণের এই দলিলে ছিল একটি লিখিত চুক্তি যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তান ইস্টার্ন কমান্ডের আত্মসমর্পণকে নিশ্চিত করে এবং ১৯৭১ সালের ভারত(বাংলাদেশ)-পাকিস্তান যুদ্ধের সমাপ্তি চিহ্নিত করে।

স্বতন্ত্র দেশ হিসেবে বাংলাদেশের স্বীকৃতিলাভ :

  • পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর আত্মসমর্পণ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সমাপ্তি এবং “বাংলা দেশ” (পরবর্তীতে “বাংলাদেশ”) সৃষ্টিকে চিহ্নিত করে। 
  • জাতিসংঘের অধিকাংশ সদস্য দেশ বাংলাদেশকে স্বাধীনতার কয়েক মাসের মধ্যেই স্বীকৃতি দিয়েছিল।
  • প্রথম স্বীকৃতি দিয়েছিলো ভারত ও ভুটান (৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১) । 
  • পরবর্তীতে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া সহ সকল দেশই পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। 

বিজয় দিবস উদযাপন :

  • ১৯৭২ সাল থেকে বিজয় দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সিনেমা, সাহিত্য, স্কুলে ইতিহাস পাঠ, গণমাধ্যম এবং শিল্পকলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হয়ে উঠেছে ।
  • উদযাপনের প্রক্রিয়া ধীরে ধীরে এক স্বতন্ত্র চরিত্র লাভ করে, জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সামরিক কুচকাওয়াজ, আনুষ্ঠানিক সভা, বক্তৃতা, অভ্যর্থনা এবং আতশবাজি প্রদর্শন ইত্যাদির মাধ্যমে এই দিনটি শ্রদ্ধার সাথে পালিত হয় বাংলাদেশে।
  • বাংলাদেশের টিভি এবং রেডিও স্টেশনগুলি বিশেষ অনুষ্ঠান এবং দেশাত্মবোধক গান সম্প্রচার করা হয় এই দিনটিতে। 
  • প্রধান সড়কগুলো জাতীয় পতাকায় সজ্জিত হয়ে ওঠে।
  • ঢাকা জেলার সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং আর্থ-সামাজিক সংগঠন দিবসটি যথাযথভাবে পালন করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে।

বিজয় দিবস উপলক্ষে কিছু কর্মসূচি :

  • ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তান-এর শাখা গুলি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। 
  • ১৯৭২ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের ( People’s Republic of Bangladesh) সংবিধান কার্যকর করা হয়। 
  • ১৯৯৬ সালে, বাংলাদেশ ব্যাংক বিজয় দিবসের রজত জয়ন্তী উপলক্ষে ওভারপ্রিন্ট সহ একটি ১০ ​​টাকার নোট জারি করে।

আরও দেখে নাও :

বাংলাদেশের প্রধান সংবাদপত্র ও প্রতিষ্ঠা সাল তালিকা – PDF

১০০+ বাংলাদেশ সম্পর্কিত MCQ প্রশ্ন ও উত্তর

To check our latest Posts - Click Here

Telegram

Related Articles

Back to top button