History NotesGeneral Knowledge Notes in Bengali

ভারতের ঐতিহাসিক ষড়যন্ত্র মামলা সমূহের তালিকা PDF

List of Famous Conspiracy Cases during British Rule in India

ভারতের ঐতিহাসিক ষড়যন্ত্র মামলা সমূহ PDF

প্রিয় পাঠেকরা, আজকে আমরা আলোচনা করবো ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ টপিক – ভারতের ঐতিহাসিক ষড়যন্ত্র মামলা সমূহের তালিকা (List of Famous Conspiracy Cases during British Rule in India ) নিয়ে। ঐতিহাসিক এই মামলা গুলো কবে হয়েছিল, কেন হয়েছিল এবং এর ফলাফল কি হয়েছিল – এই তথ্যগুলি থেকে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলিতে প্রশ্ন এসেই থাকে। তাই আমরা চেষ্টা করলাম সংক্ষেপে গুরুত্বপূর্ণ ষড়যন্ত্র মামলাগুলি সম্পর্কে এই তথ্যগুলি তুলে ধরার।

মুজাফফরপুর ষড়যন্ত্র মামলা

  • সময় কাল : ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দ
  • কারণ :  কিংসফোর্ডকে হত্যার চেষ্টার পরিপ্রেক্ষিতে এই মামলা শুরু হয়। ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকী কিংসফোর্ডকে হত্যা করতে তাঁর গাড়িতে বোমা নিক্ষেপ করলেও কিংসফোর্ড বেঁচে যান এবং তাঁর বদলে দুইজন ব্রিটিশ মহিলা মারা যান।
  • ফলাফল : ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকীকে গ্রেপ্তার করেন ব্রিটিশ পুলিশ অফিসার নন্দলাল ব্যানার্জী। (পরবর্তীকালে নন্দলাল ব্যানার্জী কে হতে করেন নরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী )। ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকী অভিযুক্ত হন। প্রফুল্ল চাকী আত্মহত্যা করেন ও বিচারে ক্ষুদিরামের ফাঁসি হয়।

আলিপুর বোমা ষড়যন্ত্র মামলা

  • সময় কাল : ১৯০৮-০৯ খ্রিস্টাব্দ
  • কারণ : কলকাতার মুরারিপুকুর বাগানবাড়িতে বিপ্লবীদের গুপ্ত ঘাঁটি ছিল। পুলিশ সেখানে তল্লাশি চালিয়ে তাঁদের গুপ্ত ঘাঁটি ও বোম উদ্ধার করে। বিপ্লবীরা ধরা পড়েন এবং আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে তাঁদের বন্দি করা হয়।
  • ফলাফল : অরবিন্দ ঘোষ, বারীন্দ্র ঘোষ, কানাইলাল দত্ত, সত্যেন বসু, উল্লাসকর দত্ত-সহ ৩০ জনেরও অধিক বিপ্লবী অভিযুক্ত হন। অরবিন্দ ঘোষ মুক্তি পেলেও বাকি বিপ্লবীদের ফাঁসি ও দীপান্তর হয়।

হাওড়া-শিবপুর ষড়যন্ত্র মামলা

  • সময় কাল : ১৯১০ খ্রিস্টাব্দ
  • কারণ : ১৯১০ সালে ইন্সপেক্টর সামসুল আলমের হত্যার পরে অনুশীলন সমিতির ৪৭ জন ভারতীয় বিপ্লবীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
  • ফলাফল : বিচারে ৩৩ জনকে মুক্তি দেওয়া হয় এবং যতীন মুখোপাধ্যায় ও নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের এক বছর কারাদন্ড হয়।

নাসিক ষড়যন্ত্র মামলা

  • সময় কাল : ১৯১০-১১ খ্রিস্টাব্দ
  • কারণ : দামোদর বিনায়ক সাভারকারের পরিকল্পনা মতাে মদনলাল ধিংড়া কার্জন উইলিকে হত্যা করেন ও অনন্তলক্ষণ কানহেরে নাসিকের ডি এম জ্যাকসনকে হত্যা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে এই মামলা শুরু হয়।
  • ফলাফল : অনন্তলক্ষণ কানহেরে, কৃষ্ণগােপাল কার্ভে, নারায়ণ দেশপাণ্ডের ফাসি হয়। দামোদর সাভারকারের ২৬ বছরের কারাদণ্ড হয়।

তিনেভেলি ষড়যন্ত্র মামলা

  • সময় কাল : ১৯১১-১৫ খ্রিস্টাব্দ
  • কারণ : মাদ্রাজের বিপ্লবী চিদাম্বরণ পিল্লাই তুতিকোরিন ও তিনেভেলিতে সরকারবিরোধী কার্যকলাপ শুরু করেন। তারা ইংরেজ ম্যাজিস্ট্রেট অ্যাশকে হত্যা করেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে এই মামলা শুরু হয়।
  • ফলাফল : চিদাম্বরণ পিল্লাই, সুব্রহ্মনীয় শিব, ধর্মরাজ আইয়ার, ভেঙ্কটেশ্বর আইয়ার-সহ ১৪ জন বিপ্লবীকে গ্রেপ্তার
    করা হয়।

রাজাবাজার বোমা ষড়যন্ত্র মামলা

  • সময় কাল : ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দ
  • কারণ : বড়োলাট লর্ড হার্ডিঞ্জ ও শ্রীহট্টের ম্যাজিস্ট্রেট গর্ডন সাহেবকে হত্যা করার জন্য রাজাবাজারে বোমা তৈরির কেন্দ্র স্থাপন করা হয়।
  • ফলাফল : অমৃতলাল হাজরা, দীনেশ চন্দ্র সেনগুপ্ত, চন্দ্রশেখর দে, কালীপদ ঘোষ, উপেন্দ্রনাথ রায় চৌধুরী, খগেন্দ্রনাথ চৌধুরী অভিযুক্ত হন।

দিল্লি ষড়যন্ত্র মামলা

  • সময় কাল : ১৯১২-১৪ খ্রিস্টাব্দ
  • কারণ : ১৯১২ সালে বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর নির্দেশে বিপ্লবী বসন্ত বিশ্বাস দিল্লিতে বড়োলাট লর্ড হার্ডিঞ্জের ওপর বোমা নিক্ষেপ করেন তার পরিপ্রেক্ষিতে এই মামলা শুরু হয়।
  • ফলাফল : বসন্ত বিশ্বাস, আমীরচাঁদ, অবোধবিহারী প্রমুখের ফাসি হয়। রাসবিহারী বসু অজ্ঞাতবাসে থাকেন।

বরিশাল ষড়যন্ত্র মামলা

  • সময় কাল : ১৯১৩-১৫ খ্রিস্টাব্দ
  • কারণ : ১৯২০-১২ সাল পর্যন্ত ১৪টি সশস্ত্র রাজনৈতিক ডাকাতির পরিপ্রেক্ষিতে বরিশালে এই মামলা শুরু হয়।
  • ফলাফল : মদনমোহন ভৌমিক, ত্রৈলক্যনাথ চক্রবর্তী, প্রতুল চন্দ্র গাঙ্গুলি, রমেশচন্দ্র চৌধুরী-সহ বেশ কয়েকজন বিপ্লবী অভিযুক্ত হন ও বিচারে কারাদণ্ড হয়।

হিন্দু ষড়যন্ত্র মামলা

  • সময় কাল : ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দ
  • কারণ : প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারতের ব্রিটিশ শাসনের উচ্ছেদের জন্য ষড়যন্ত্র মামলা শুরু হয়।
  • ফলাফল : লালা হরদয়াল অভিযুক্ত হন।

লাহোর ষড়যন্ত্র মামলা (প্রথম )

  • সময় কাল : ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দ
  • কারণ : বিপ্লবী রাসবিহারী বসু উত্তর ভারতের বিভিন্ন সামরিক শিবিরে সামরিক অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা করেন। এই পটভূমিতে তার সহকর্মী বিষ্ণু গণেশ পিংলে লাহোরের সেনা শিবিরে বোমা ও কার্তুজ-সহ ধরা পড়েন। ফলে লাহোর ষড়যন্ত্র মামলা শুরু হয়।
  • ফলাফল : কাতার সিং, বিষ্ণু গণেশ পিংলে-সহ ১৭ জন বিপ্লবীর কঁসি হয়। মামলার প্রধান অভিযুক্ত আসামি রাসবিহারী বসু পি এন ঠাকুর ছদ্মনামে জাপানে পালিয়ে যান।

ইন্দো-জার্মান ষড়যন্ত্র মামলা

  • সময় কাল : ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দ
  • কারণ : মাভেরিক নামক একটি জার্মান জাহাজে করে ভারতে অস্ত্র আনা হচ্ছিল। অস্ত্র-সহ জাহাজটি উড়িশ্যার উপকুলে ধরা পড়লে এই মামলা শুরু হয়।
  • ফলাফল : বুড়িবালামের তীরে সম্মুখ যুদ্ধে বাঘাযতীনের মৃত্যু হয়। নীরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত ও মনোরঞ্জন সেনগুপ্তের ফাসি হয়। জ্যোতিষ পালের জেল হয়।

রেশমি রুমাল ষড়যন্ত্র মামলা

  • সময় কাল : ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দ
  • কারণ : কাবুলে বিপ্লবীরা রেশমি রুমালে চিঠিপত্র আদানপ্রদান করতে গিয়ে তা প্রকাশ হয়ে পড়ে। ফলে এই মামলা শুরু হয়।
  • ফলাফল : বরকতুল্লা, মৌলানা ওবেদুল্লা, মহেন্দ্র প্রতাপ, মামুদ হাসান, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখরা অভিযুক্ত হন।

কানপুর  ষড়যন্ত্র মামলা

  • সময় কাল : ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • কারণ : ৪ জন কমিউনিস্ট বিপ্লবী নেতাদের ব্রিটিশ বিরোধী ক্রিয়াকলাপের পরিপ্রেক্ষিতে এই মামলা শুরু হয়।
  • ফলাফল : মুজফফর আহমেদ, এস এ ডাঙ্গে, সওকত উসমানি ও নলিনী গুপ্ত অভিযুক্ত হন।

কাকড়ি ষড়যন্ত্র মামলা

  • সময় কাল : ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • কারণ : বিপ্লবী ভগৎ সিংয়ের নির্দেশে বিপ্লবী রামপ্রসাদ বিসমিল উত্তরপ্রদেশের কাকোরি রেলস্টেশনে ট্রেনে ডাকাতি করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এই মামলা শুরু হয়।
  • ফলাফল : রামপ্রসাদ বিসমিল, আসফাকুল্লা, রাজেন্দ্রনাথ লাহিড়ী প্রমুখের ফাসি হয়। যোগেশ চট্টোপাধ্যায়, শচীন্দ্রনাথ সান্যালের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।

ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলা

  • সময় কাল : ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দ
  • কারণ : ঢাকায় একটি রাজনৈতিক ডাকাতির ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই মামলা শুরু হয়।
  • ফলাফল : পুলিনবিহারী দাস, ভূপেশ চন্দ্র নাগ, শ্যামসুন্দর চক্রবর্তী, কৃষ্ণকুমার মিত্র, সুবোধ মল্লিক, অশ্বিনী দত্ত-সহ ৪৬ জন বিপ্লবী অভিযুক্ত হন। পুলিনবিহারী দাসের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।

লাহোর ষড়যন্ত্র মামলা (দ্বিতীয় )

  • সময় কাল : ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দ
  • কারণ : বিপ্লবী ভগৎ সিং ১৯২৮ সালে লাহোরের পুলিশ ইন্সপেক্টর সন্ডার্সকে হত্যা করে। ১৯২৯ সালে ভগৎ সিং, বটুকেশ্বর দত্ত দিল্লিতে পার্লামেন্টের সামনে বোমা নিক্ষেপ করেন। এর সূত্র ধরে লাহোর ও সাহারামপুরে বোমা তৈরির কারখানা আবিষ্কৃত হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে এই মামলা শুরু হয়।
  • ফলাফল : ভগৎ সিং, শুকদেব, রাজগুরু, বটুকেশ্বর দত্ত, প্রমুখের ফাঁসি হয়। বিপ্লবী যতীন দাস ৬৪ (মতান্তরে ৬৩ দিন ) দিন অনশন করে প্রাণ ত্যাগ করেন।

মীরাট ষড়যন্ত্র মামলা

  • সময় কাল : ১৯২৯-৩৩ খ্রিস্টাব্দ
  • কারণ :দিল্লি আইনসভার সামনে বোমা নিক্ষেপকে কেন্দ্র করে এই মামলা শুরু হয়।
  • ফলাফল : এস এ ডাঙ্গে, মুজফফর আহমেদ, এস এস জোশ-সহ 32 জন বিপ্লবী অভিযুক্ত হন।

আরও দেখে নাও :

ভারতের ঐতিহাসিক সন্ধি ও চুক্তি -; তালিকা PDF

কিছু ঐতিহাসিক গ্রন্থ ও তার লেখক – PDF – ঐতিহাসিক বই

ঐতিহাসিক সমাজ-সমিতি ও তাদের প্রতিষ্ঠাতা

খিলাফত আন্দোলন – ১৯১৯ সাল – Khilafat movement

ঐতিহাসিক লিপিসমূহ ( PDF )

নিচের ডাউনলোড সেকশন থেকে এই নোটটির পিডিএফ ডাউনলোড করে নাও ।

Download Section

  • File Name: ভারতের ঐতিহাসিক ষড়যন্ত্র মামলা সমূহের তালিকা – বাংলা কুইজ
  • File Size: 2.7 MB
  • No. of Pages: 03
  • Format: PDF
  • Language: Bengali
  • Subject: Indian History

To check our latest Posts - Click Here

Telegram

Related Articles

Back to top button