Polity NotesGeneral Knowledge Notes in Bengali

রাজ্য পুনর্গঠন । States Re-organisation

States Re-organisation Act, 1956

রাজ্য পুনর্গঠন । States Re-organisation

আজকে আমরা দেখে নেবো ভারতের রাজ্য পুনর্গঠন / States Re-organisation ।

এই নোটটির PDF ডাউনলোড লিংক পোস্টটির নিচে পেয়ে যাবে ।

রাজ্য পুনর্গঠনের ইতিহাস

  • ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার সময় ৫৫২ টি দেশীয় রাজ্য, ৯ টি রাজ্যপাল শাসিত রাজ্য এবং ৫ টি চিফ কমিশনার শাসিত প্রদেশ ছিল।
  • এরপর ধীরে ধীরে সব রাজ্যগুলি ভারতের অন্তর্ভুক্ত হলেও তিনটি দেশীয় রাজ্য জম্মু ও কাশ্মীর, হায়দ্রাবাদ এবং জুনাগড় পরে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়।
  • জম্মু ও কাশ্মীর ১৯৪৭ সালের ২৬শে অক্টোবর ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। তখন জম্মু ও কাশ্মীর এর রাজা ছিলেন হরি সিং।
    ১৯৪৮ সালে ‘অপারেশন পোলো’ র মাধ্যমে হায়দ্রাবাদ ভারতে অন্তর্ভুক্ত হয়। তখন হায়দ্রাবাদের নিজাম ছিলেন মির ওসমান আলি খান।
  • ১৯৪৮ সালেই জুনাগড় ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। তখন জুনাগড়ের শাসক ছিলেন নবাব মুহাম্মদ মহাবত খানজি (III) ।
    এরপর বিভিন্ন অংশ (মূলত দক্ষিণ ভারত )থেকে ভাষার ভিত্তিতে রাজ্য পুনর্গঠন এর দাবি ওঠে। সেই জন্য ভারত সরকার ১৯৪৮ সালের জুন মাসে এস.কে.ধরের নেতৃত্বে Linguistic Provinces Commission নিযুক্ত করে।
  • ধর কমিশন ১৯৪৮ এর ডিসেম্বর মাসে তাদের রিপোর্ট পেশ করে এবং তারা ভাষার ভিত্তিতে নয় বরং প্রশাসনিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে রাজ্য পুনর্গঠন এর জন্য সওয়াল করে।
  • এরপর জাতীয় কংগ্রেস ১৯৪৮ এর ডিসেম্বর এ পুনরায় একটি Linguistic Provinces Committee তৈরি করে। এই কমিটিতে ছিলেন Jawaharlal Nehru, Vallahbhai Patel এবং Pattabhi Sitaramayya । সেই কারনে এটি JVP Committee নামেও পরিচিত। তারা ১৯৪৯ এর এপ্রিল মাসে তাদের রিপোর্ট পেশ করে এবং প্রাথমিক ভাবে ভাষার ভিত্তিতে রাজ্য পুনর্গঠনের দাবি কে খন্ডন করে।
  • তবুও, ১৯৫৩ সালের অক্টোবর মাসে ভারত সরকার ভাষার ভিত্তিতে গঠিত প্রথম রাজ্য হিসাবে অন্ধ্র (মাদ্রাজ রাজ্যের তেলেগু ভাষার আধিক্য রয়েছে সেই অংশগুলিকে পৃথক করে) কে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। এই রাজ্যের গঠনের পিছনে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন গান্ধিবাদি নেতা পট্টী শ্রীরামালু
  • অন্ধ্র রাজ্যের সৃষ্টির ফলে ভাষার ভিত্তিতে রাজ্য পুনর্গঠনের দাবি আরও জোরালো হয়ে ওঠে। সরকার বাধ্য হয়ে ১৯৫৩ এর ডিসেম্বর মাসে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য ফজল আলীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের রাজ্য পুনর্গঠন কমিটি নিয়োগ করে। এই কমিটি বাকি দুজন সদস্য হলেন কে.এম.পানিক্কর এবং এইচ.এন.কুঞ্জরু। তাঁরা ১৯৫৫ সালে তাদের রিপোর্ট পেশ করেন এবং ভাষার ভিত্তিতে রাজ্য পুনর্গঠনের দাবীকে মান্যতা দেন। তবে, এক ভাষা এক রাজ্যের দাবীকে নস্যাৎ করেন। তাঁদের মতে যে কোনো ক্ষেত্রেই রাষ্ট্রের ঐক্যকেই প্রাধান্য দিতে হবে।
  • ফজল আলী কমিশন ১৬টি রাজ্য এবং ৩টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রস্তাব দেয়। সরকার কিছু সংশোধনের সাথে এই দাবীকে মেনে নেয়। এরপর ১৯৫৬ সালের সপ্তম সংবিধান সংশোধনী আইনের মাধ্যমে ১৯৫৬ সালের ১লা নভেম্বর ১৪টি রাজ্য এবং ৬টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠিত হয়।

স্বাধীনতার সময়ের ভারতের রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তালিকা

রাজ্যকেন্দ্রশাসিত অঞ্চল
অন্ধ্রপ্রদেশআন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ
আসামদিল্লী
বিহারহিমাচলপ্রদেশ
বোম্বেলাক্ষাদ্বীপ,মিনিকয় ও আমিনদিভি দ্বীপপুঞ্জ
জম্মু ও কাশ্মীরমণিপুর
কেরালাত্রিপুরা
মধ্যপ্রদেশ 
মাদ্রাজ 
মাইসোর 
উড়িষ্যা 
পাঞ্জাব 
রাজস্থান 
উত্তরপ্রদেশ 
পশ্চিমবঙ্গ 
স্বাধীনতার ঠিক পরে ভারতের ১৪টি রাজ্য ও ৬টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তালিকা

১৯৫৬ এর পরে গঠিত নতুন রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল সমুহঃ

মহারাষ্ট্র এবং গুজরাট১৯৬০ সালে বোম্বে রাজ্যটি ভেঙে মারাঠি ভাষাভাষীদের জন্য মহারাষ্ট্র এবং গুজরাটি ভাষাভাষীদের জন্য ভারতের ১৫ তম রাজ্য হিসাবে গুজ্রাট আত্মপ্রকাশ করে।
দাদরা ও নগর হাভেলি১৯৫৪ পর্যন্ত এখানে পর্তুগিজ শাসন চলত। তারপর থেকে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত স্থানীয় মানুষজন একজন প্রশাসনিক প্রধান নির্বাচন করে শাসন চালাতেন। ১৯৬১ সালে দশম সংবিধান সংশোধনী আইন মাধ্যমে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে।
গোয়া, দমন ও দিউভারত পর্তুগিজ দের কাছ থেকে পুলিশ শক্তি ব্যবহার করে ১৯৬১ সালে এই অঞ্চল গুলির দখল নেয়। দ্বাদশ সংবিধান সংশোধনী আইন এর মাধ্যমে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করা হয় ১৯৬২ সালে।পরে ১৯৮৭ সালে গোয়া একটি পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা পায়।
পুডুচেরিফরাসীরা ১৯৫৪ সালে এই অঞ্চলটি ভারতকে ফিরিয়ে দেয়। ১৪তম সংবিধান সংশোধনী আইন এর মাধ্যমে ১৯৬২ সালে কেন্দ্রশাসিত অঞ্ছলের মর্যাদা দেওয়া হয়।
নাগাল্যান্ড১৯৬৩ সালে আসামের নাগা পার্বত্য অঞ্চল এবং তুয়েন-সাং অঞ্চলটি নিয়ে ভারতের ১৬ তম রাজ্য হিসাবে নাগাল্যান্ড রাজ্য টি আত্মপ্রকাশ করে।
হরিয়ানা, চণ্ডীগড়১৯৬৬ সালে পাঞ্জাব ভেঙে হরিয়ানা ভারতের ১৭তম রাজ্যের মর্যাদা পায় এবং চণ্ডীগড় কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে।
হিমাচল প্রদেশ১৯৭১ সালে পূর্বের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিমাচল প্রদেশ পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা পায়।
মণিপুর, ত্রিপুরা এবং মেঘালয়১৯৭২ সালে মণিপুর, ত্রিপুরা এবং মেঘালয় ক্রমান্বয়ে ভারতের ১৯তম ২০তম ও ২১তম অঙ্গরাজ্যের মর্যাদা পায়।
সিকিম১৯৪৭ সাল পর্যন্ত সেখানে চোগিয়াল রাজাদের রাজত্ব ছিল। ১৯৭৫ সালে ৩৬ তম সংবিধান সংশোধনী আইনের মাধ্যমে সিকিম ভারতের ২২ তম অঙ্গরাজ্যের মর্যাদা পায়।
মিজোরাম, অরুণাচল প্রদেশ এবং গোয়া১৯৮৭ সালে তিনটি নতুন রাজ্য মিজোরাম, অরুণাচল প্রদেশ এবং গোয়া যথাক্রমে ২৩তম ২৪তম ও ২৫তম অঙ্গরাজ্য হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৭২ সাল থেকে অরুণাচল প্রদেশ যে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে গন্য হত তার অবসান ঘটে।
ছত্তিসগড়, উত্তরাখন্ড এবং ঝাড়খণ্ড২০০০ সালের ১লা নভেম্বর, ৯ই নভেম্বর, ১৫ই নভেম্বর যথাক্রমে ছত্তিসগড়, উত্তরাখন্ড এবং ঝাড়খণ্ড ভারতের ২৬তম, ২৭তম, ও ২৮তম অঙ্গরাজ্য হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। ছত্তিসগড় রাজ্যটি মধ্যপ্রদেশ রাজ্য ভেঙে, উত্তরাখন্ড রাজ্যটি উত্তরপ্রদেশ এর কিছু অংশ নিয়ে এবং ঝাড়খণ্ড রাজ্যটি বিহার রাজ্যের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত হয়।
তেলেঙ্গানা২০১৪ সালে অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের কিছু অংশ নিয়ে তেলেঙ্গানা রাজ্যটি গঠিত হয়।
জম্মু কাশ্মীর ও লাদাখজম্মু এবং কাশ্মীর পুনর্গঠন আইন ২০১৯ অনুসারে পূর্বের জম্মু কাশ্মীর রাজ্যটি নতুন ভাবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে এবং পূর্বের রাজ্যতির কিছু অংশ নিয়ে লাদাখ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠিত হয়।
দমন ও দিউ, দাদরা ও নগর হাভেলি২০২০ সালের ২৬শে জানুয়ারি থেকে পূর্বের দমন ও দিউ এবং দাদরা ও নগর হাভেলি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দুটি মিলিয়ে দেওয়া হয়। সুতরাং উক্ত দিনের পর থেকে এই দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হয়েছে।
স্বাধীনতার পরে ভারতের রাজ্য পুনর্গঠন

বর্তমানে ভারতে মোট ২৮ টি অঙ্গরাজ্য এবং ৮ টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল রয়েছে।

ভারতের সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের রাজধানী – ২০২১ – PDF

ভারতের রাজনৈতিক দল – জাতীয় দল ও রাজ্যস্তরের দল হওয়ার যোগ্যতা

[ Information Updated on : 08-10-2020 ]

আরো দেখে নাও :

Download Section

  • File Name : রাজ্য পুনর্গঠন । States Re-organisation – বাংলা কুইজ
  • File Size : 1.7 MB
  • No. of Pages : 04
  • Format : PDF
  • Language : Bengali
  • Subject : Indian Polity

To check our latest Posts - Click Here

Telegram

Pratik Debnath

Lives in Beldanga. YouTuber , Quiz Enthusiast, Active Author of BanglaQuiz WebSite and Youtube .

Related Articles

Back to top button