বাংলাদেশের ভৌগলিক নির্দেশক স্বীকৃত পণ্যের তালিকা – PDF Download – বাংলাদেশের জি আই পণ্য
list of gi tagged products of Bangladesh

বাংলাদেশের ভৌগলিক নির্দেশক স্বীকৃত পণ্যের তালিকা – বাংলাদেশের জি আই পণ্য
প্রিয় পাঠকেরা, আজকে আমরা আলোচনা করবো বাংলাদেশের ভৌগলিক নির্দেশক স্বীকৃত পণ্যের তালিকা নিয়ে। বাংলাদেশের কোন কোন পণ্য জিওগ্রাফিক্যাল আডেন্টিফিকেশন (জি-আই) ট্যাগ পেয়েছে তার একটি সুন্দর তথ্য নিচে উপস্থাপন করা হল। List of GI tagged products of Bangladesh ।
দেখে নাও : ১০০+ বাংলাদেশ সম্পর্কিত MCQ প্রশ্ন ও উত্তর
দেখে নাও : বাংলাদেশের প্রধান সংবাদপত্র ও প্রতিষ্ঠা সাল তালিকা – PDF
বাংলাদেশের জি আই পণ্য
বর্তমানে মোট ৯টি পণ্য বাংলাদেশ থেকে জি-আই তকমা পেয়েছে। এগুলি হল –
নং | জি-আই পণ্য | স্বীকৃতি বছর |
---|---|---|
১ | জামদানি | ২০১৬ |
২ | ইলিশ মাছ | ২০১৭ |
৩ | রাজশাহী সিল্ক | ২০১৭ |
৪ | ক্ষীরসাপাতি আম | ২০১৯ |
৫ | রংপুরের শতরঞ্জি | ২০২১ |
৬ | ঢাকাই মসলিন | ২০২১ |
৭ | কালিজিরা ধান | ২০২১ |
৮ | দিনাজপুরের কাটারীভোগ ধান | ২০২১ |
৯ | বিজয়পুরের সাদামাটি | ২০২১ |
১. জামদানি
বাংলাদেশের প্রথম ভৌগলিক নির্দেশক স্বীকৃত পণ্য হল – জামদানি । ২০১৬ সালে এটি স্বীকৃতি পায়। যদিও এর আগে ২০১৩ সালে ইউনেস্কো ঐতিহ্যবাহী জামদানিকে ‘ইনট্যানজিবল হেরিটেজ অব বাংলাদেশ’ হিসেবে ঘোষণা করেছিল ।
জামদানি বলতে মূলত শাড়িকে বোঝালেও জামদানি কুর্তি, ওড়না, পাঞ্জাবি প্রভৃতিও বানানো হয়ে থাকে। মূলত কার্পাস তুলা দিয়ে এই জামদানি প্রস্তুত করা হয়। যদিও রেশম সুতো ও সুতির সুতো দিয়েও কিছু জামদানি তৈরী করা হয়ে থাকে।
জামদানির বৈশিষ্ট্য হল এগুলো সম্পূর্ণ হাতে বোনা। ঢাকার নারায়ণগঞ্জ ও সোনারগাঁওয়ে সবচেয়ে বেশি জামদানি তৈরি হয়। জামদানি শাড়ির কাজ এটি ভালো যে বিভিন্ন ঐতিহাসিক যেমন – ইবন বতুতা থেকে শুরু করে ব্রিটেন ও বিভিন্ন দেশের পর্যটক বাংলাদেশ ভ্রমণের সময় এই শাড়ির প্রশংসা করেছেন। উনিশ শতকে বাংলা, দিল্লি, লখ্নৌর নবাবরা এই জামদানি পোশাক পরতেন।
দেখে নাও : বাংলাদেশের বিজয় দিবস – ১৬ই ডিসেম্বর
২. ইলিশ মাছ
মাছ খেতে কে না ভালোসাবে! আর মাছটি ইলিশ হলে তো আর কোনো কোথায় নেই। তার ওপরে পদ্মার ইলিশের স্বাদের কোনো তুলনায় নেই।
বাংলাদেশের এই বিখ্যাত ইলিশ ২০১৭ সালে জি আই তকমা পায়। বিশ্বের মোট ইলিশের ৭০% এর বেশি বাংলাদেশে উৎপন্ন হয়। স্বাদে ও ঘ্রানে বাংলাদেশে ইলিশের জুড়ি মেলা ভার।
মেঘনা নদীর ঢলচর, মনপুরা দ্বীপ, মৌলভির চর, কালির চার এই ৪টি এলাকার সাত হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা ইলিশের প্রধান প্রজনন ক্ষেত্র।
৩. রাজশাহী সিল্ক
রাজশাহী সিল্ক ২০১৭ সালে জি আই তকমা পায়।
মালবেরি সিল্ক থেকে এই সিল্ক তৈরী হয়। মালবেরির বলতে আমরা যেটাকে বলে থাকি তুঁত গাছ। এই গাছের পাতা রেশম পোকা ২০-২২ দিন খাওয়ার পর পোকার মুখ থেকে লালা নিঃসৃত হয়। সেই লালা থেকে তৈরি হয় রেশম গুটি।এই রেশম গুটি থেকে রিলিং মেশিনের মাধ্যমে সুতা বা কাঁচা রেশম উত্তোলন করা হয়। এই রেশম থেকেই তৈরী হয় রাজশাহী সিল্ক।
রাজশাহী সিল্ক বেশ নরম ও উজ্জ্বল। শীত, গ্রীষ্ম সব ঋতুতেই এই সিল্ক পরিধান করা যায়।
দেখে নাও : পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সামগ্ৰী
৪. ক্ষীরসাপাতি আম
ক্ষীরসাপাতি আম ২০১৯ সালে জিআই স্বীকৃতি পায়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ, ভোলারহাট ও গোমস্তাপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি খিরসাপাত/ক্ষীরসাপাতি আমের চাষ হয়ে থাকে।
এই আম একটু ছোট সাইজের হয়ে থাকে। তবে এই আমের মূল বৈশিষ্ট্য হল এর শাঁস আশবিহীন, রসালো, গন্ধ বেশ আকর্ষণীয় এবং স্বাদে খুব মিষ্টি।
বাংলাদেশের আমগুলির মধ্যে সবথেকে ভালো মানের আমি হিসেবে মনে করা হয় এই ক্ষীরসাপাতি আমকে।
৫. রংপুরের শতরঞ্জি
রংপুরের শতরঞ্জি ২০২১ সালে জিআই স্বীকৃতি পায় যদিও আবেদন করা হয়েছিল ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে।
এই শিল্প মূলত গড়ে উঠেছে রংপুরের ঘাঘট নদীর তীরে নিসবেতগঞ্জ গ্রামে। নিসবেতগঞ্জ গ্রামের পূর্বনাম ছিল পীরপুর। ব্রিটিশ নাগরিক মি. নিসবেট এই শতরঞ্জি শিল্পের প্রসার ঘটাতে প্রভূত সহায়তা করে পরবর্তীকালে তাঁর নাম অনুসারে এই গ্রামের নাম রাখা হয় নিসবেতগঞ্জ ।
ব্রিটিশ আমলে এই শতরঞ্জি এত বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল যে এই শতরঞ্জি সমগ্র ভারতবর্ষ, বার্মা, সিংহল, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হত।
৬. ঢাকাই মসলিন
ঢাকাই মসলিন ২০২১ সালে জিআই স্বীকৃতি পেয়েছিল।
ঢাকাই মসলিন হচ্ছে ফুটি কার্পাস তুলায় তৈরি এক ধরণের সূক্ষ্ম ও পাতলা কাপড়। এই কাপড় এতটাই নরম ও পাতলা হত যে কথিত আছে যে পুরো একটি শাড়ি আংটির ভেতর দিয়ে এপার-ওপার করা যেত। এই কাপড় মোগল আমলে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। এই কাপড়কে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও আভিজাত্যের সাক্ষী হিসেবেও বর্ণনা করা হয়েছে।
৭. কালিজিরা
বাংলাদেশের কালিজিরা ২০২১ সালে জিআই স্বীকৃতি পেয়েছিল।
এটি একধরণের বিশেষ ধান যার বাইরের খোসাটা কালো রঙের হয়ে থাকে। ভেতরে সাদা ধান থাকে। এই ধানের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল এটি খুব ছোট এবং সুগন্ধযুক্ত।
এই চাল দিয়ে মূলত ভাত, পোলাও, পায়েস বা ফিরনি তৈরি করা হয়। ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে বাংলাদেশের ময়মনসিংহ অঞ্চলে প্রধানত এই ধান উৎপন্ন হয়।
৮. দিনাজপুরের কাটারীভোগ ধান
বাংলাদেশের দিনাজপুরের কাটারীভোগ ধান ২০২১ সালে জিআই স্বীকৃতি পেয়েছিল।
এই ধানের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল এ থেকে উৎপাদিত চাল সরু ও সুগন্ধি।
এই ধান যদিও বাংলাদেশের অন্যান্য জেলাতেও উৎপন্ন হয় তবে দিনাজপুরের ধানের সুগন্ধ অনেক বেশি হয়। এই কারণেই দিনাজপুরের কাটারীভোগ পণ্যটিকেই এই স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।
৯. বিজয়পুরের সাদামাটি
বিজয়পুরের সাদামাটি ২০২১ সালে জিআই স্বীকৃতি পেয়েছিল।
নেত্রকোনা জেলার বিজয়পুরে সাদামাটি বিপুল পরিমানে পাওয়া যায়। এই মাটি প্রাকৃতিক ভাবে কেওলিন বা অ্যালুমিনিয়াম সমৃদ্ধ।
Download Section
- File Name : বাংলাদেশের ভৌগলিক নির্দেশক স্বীকৃত পণ্যের তালিকা – PDF Download
- File Size : 1.7 MB
- No. of Pages : 04
- Format : PDF
- Language : Bengali
- Subject : Bangladesh Geography
To check our latest Posts - Click Here