NotesGeneral Knowledge Notes in Bengali

মানব কর্ণের বিভিন্ন অংশ, তার কাজ ও অবস্থান

Human Ear: Structure and Functions

মানব কর্ণের বিভিন্ন অংশ, তার কাজ ও অবস্থান

আজকে আমরা আলোচনা করবো মানব কর্ণের বিভিন্ন অংশ, তার কাজ ও অবস্থান নিয়ে।

কর্ণ কাকে বলে ?

কর্ণ হচ্ছে একটি বিশেষ ধরনের সংবেদী অঙ্গ যা দেহের শ্রবণ ও ভারসাম্য কার্য সম্পন্ন করে। মাথার দু’পাশে দুটি কর্ণ অবস্থিত।

মানব কর্ণের কতগুলি অংশ রয়েছে ?

মানুষের কর্ণ প্রধানত তিনটি অংশে বিভক্ত। যথা-

  • বহিঃকর্ণ (External ear)
  • মধ্য কর্ণ (Middle ear)
  • অন্তঃকর্ণ (Internal ear)

বহিঃকর্ণ

এটি কর্ণের প্রথম অংশ। এটি তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত –

কর্ণছত্র বা পিনা

এটি বহিঃকর্ণের সবচেয়ে বাইরের অংশ। এটি ত্বক, পেশি ও কোমলাস্থি দ্বারা গঠিত।

কাজ : পরিবেশ থেকে শব্দতরঙ্গ সংগ্রহ ও কেন্দ্রীভূত করে কর্ণকুহরে প্রেরণ করে।

কর্ণকুহর

এটি সংক্ষিপ্ত নলাকার গহ্বর- যা কর্ণছত্রের কেন্দ্রস্থল থেকে টিম্প্যানামের পর্দা পর্যন্ত বিস্তৃত। এতে অনেক মোম গ্রন্থি ও লোম আছে।

কাজ : এক মাধ্যমে শব্দতরঙ্গ কর্ণপটহে পৌঁছায়। এ ছাড়া মোম ও লোম কর্ণকুহরে ধুলাবালি প্রবেশে বাধা প্রদান করে।

কর্ণপটহ

কর্ণকুহরের শেষ প্রান্তে এবং মধ্যকর্ণের মুখে আড়াআড়িভাবে অবস্থিত ডিম্বাকার পর্দাকে কর্ণপটহ বলা হয়।

কাজ : শব্দতরঙ্গ কর্ণকুহরের মাধ্যমে এসে কর্ণপটহকে স্পন্দিত করে।

মধ্যকর্ণ

কর্ণপটহ থেকে অন্তঃকর্ণ পর্যন্ত বিস্তৃত নলাকার বায়ুপূর্ণ গহ্বরটিকে মধ্যকর্ণ বলে। এতে নিন্মোক্ত অংশগুলো পাওয়া যায়।

ইউস্টেশিয়ান নালী

মধ্যকর্ণের অঙ্কীয়দেশ হতে সৃষ্ট এ সরুনালীটি গলবিল পর্যন্ত বিস্তৃত।

কাজ : কর্ণপটহের উভয় পাশের বায়ুর চাপ সমান রাখাই এর কাজ।

কর্ণাস্থি

এরা তিনটি ক্ষুদ্রাকার অস্থি নিয়ে গঠিত।

  • মেলিয়াস : দেখতে হাতুড়ির ন্যায়। এর এক প্রান্ত কর্ণপটহের সঙ্গে এবং অপর প্রান্ত ইনকাসের সঙ্গে যুক্ত থাকে।
  • ইনকাস : দেখতে অনেকটা ‘নেহাই’ বা বাটুলের মতো। এর এক প্রান্ত মেলিয়াসের সঙ্গে এবং অপর প্রান্ত স্টেপিসের সঙ্গে যুক্ত থাকে।
  • স্টেপিস : দেখতে ঘোড়ার জিনের পা-দানির মতো ত্রিকোণাকৃতি অস্থি। এর এক প্রান্ত ইনকাসের সঙ্গে; অপর প্রান্ত ফেনেস্ট্রা ওভালিসের (অন্তঃকর্ণের ডিম্বাকৃতি ছিদ্রপথ) গায়ে বসানো থাকে।

কর্ণাস্থির কাজ : এরা কর্ণপটহে উৎপন্ন শব্দতরঙ্গ অন্তঃকর্ণের পেরিলিস্কে বহন করে।

ছিদ্রপথ

মধ্যকর্ণের প্রাচীরে দুটো ক্ষুদ্রাকার ছিদ্র পথ থাকে। উপরের দিকের ডিম্বাকার ছিদ্রটিকে ফেনেস্ট্রা ওভালিস এবং নিচের দিকের গোলাকার ছিদ্রটিকে ফেনেস্ট্রা রোটান্ডা বলা হয়।

কাজ : ছিদ্র দুটোর মাধ্যমে মধ্যকর্ণ অন্তঃকর্ণের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে।

অন্তঃকর্ণ

  • পাতলা পর্দা জাতীয় মেমব্রেনাস ল্যাবিরিন্থ নামক জটিল অঙ্গ দ্বারা অন্তঃকর্ণ গঠিত।
  • মেমব্রেনাস ল্যাবিরিস্থ পেরিলিস্ফে ভাসমান অবস্থায় থাকে এবং এন্ডোলিম্ফ দ্বারা পূর্ণ থাকে।
  • মেমব্রেনাস ল্যাবিরিন্থ দুটো প্রধান অংশের সমন্বয়ে গঠিত-

ইউট্রিকুলাস (ভারসাম্য অঙ্গ)

এটি অন্তঃকর্ণের ওপরের দিকের গোলাকার প্রকোষ্ঠ (ভারসাম্য অঙ্গ)। এর বিভিন্ন স্থান থেকে তিনটি অর্ধবৃত্তাকার নালী উৎপন্ন হয়ে আবার এতে প্রবেশ করে। এদের দুটি উলম্বভাবে এবং অপরটি অনুভূমিকভাবে অবস্থিত। এরা পরস্পরের সঙ্গে সমভাবে অবস্থিত। প্রতিটি নালীর একটি প্রান্ত স্ফীত হয়ে সংবেদী লোম যুক্ত অ্যাম্পুলা গঠন করে।

কাজ : দেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণে মস্তিষ্কের সেরিবেলামকে সাহায্য করে এবং দেহে অবস্থানের অনুভূতির উদ্রেক করে।

স্যাকুলাস (শ্রবণ অঙ্গ)

এটি অন্তঃকর্ণের নিচের প্রকোষ্ঠ। এটি একটি সংক্ষিপ্ত নালী দ্বারা ইউট্রিকুলাসের সঙ্গে যুক্ত থাকে। এর অঙ্কীয় দেশ হতে প্রলম্বিত এবং শামুকের ন্যায় প্যাঁচানো ‘ককলিয়া’ নামক নালী বের হয়। ককলিয়ার অন্তঃপ্রাচীরে শ্রবণ সংবেদী কোষ দ্বারা গঠিত ‘অর্গান অফ কর্টি’ অবস্থিত।

কাজ : অর্গান অফ কর্টির সাহায্যে শ্রবণ অনুভূতির সৃষ্টি হয়।

আরও দেখে নাও :

মানব চক্ষুর বিভিন্ন রোগ সমূহ । চোখের বিভিন্ন রোগের নাম

বিভিন্ন প্রাণীর গমন অঙ্গ ও গমন পদ্ধতি PDF

বিভিন্ন প্রাণীর রেচন অঙ্গ তালিকা । Excretory Organs of Animals – PDF

To check our latest Posts - Click Here

Telegram

Related Articles

Back to top button