কার্গিল বিজয় দিবস ২০২৩ : Kargil Vijay Diwas 2023
২৬শে জুলাই প্রতিবছর ভারতে পালিত হয় কার্গিল বিজয় দিবস।
Kargil Vijay Diwas 2023 : ২৬শে জুলাই প্রতিবছর ভারতে পালিত হয় কার্গিল বিজয় দিবস। ১৯৯৯ সালে এই দিনে বিশ্বের অন্যতম উচ্চ যুদ্ধস্থানে ভারত পাকিস্তানকে হারিয়ে দখল করেছিল কার্গিল শিখর। সেই বছর থেকে প্রতিবছর এই দিবস ২৬শে জুলাই পালন করা হয়। ২০২৩ সালে ২৪তম কার্গিল বিজয় দিবস পালন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে লাদাখ কার্গিলের দ্রাসে অবস্থিত কার্গিল ওয়ার মেমোরিয়াল সেজে উঠতে শুরু করেছে এই বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে। এই অনুষ্ঠানে কার্গিল শহীদ জওয়ানদের পরিবারের লোকজন।
দেখে নেওয়া যাক কেন এই দিবস পালন করা হয় এবং এই দিবসের প্রেক্ষাপটের কিছু সত্য ঘটনা।
সালটা ছিল ১৯৯৯ । প্রধামন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ী। ভারত বরাবরি প্রতিবেশী দেশগুলির সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে বিশ্বাসী। সেই নীতি মেনেই পাকিস্তানের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ী। কিন্তু পাকিস্তান ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি নিচ্ছিল যুদ্ধের।
Also Check : ভারতের প্রধানমন্ত্রী – নিয়োগ , যোগ্যতা, কার্যকাল তালিকা
১৯৯৯ সালের মে মাস। কারগিলের চারিদিক বরফাচ্ছন্ন। কিন্তু পেটের দায়ে বাড়িয়েছিল এক মেষ পালক। ভারত ও পাকিস্তানের এই সীমান্ত ছিল তার নখদর্পনে। তাই চারিদিক বরফে আচ্ছাদিত হলেও অভিজ্ঞ এই মেষ পালকের কোনো অসুবিধা হচ্ছিল না। তবে সেই দিনটি ছিল একটু আলাদা। এই মেষ পালকের নজরে আসে পাকিস্তানের সেনার গতিবিধি। ততক্ষনাৎ সেই মেষ পালক খবর দেয় ভারতীয় সেনাকে।
১৯৯ সালের ৫ই মে সেই তথ্যের ওপরে ভিত্তি করে ভারতীয় সেনা একটি দল পাঠায় অনুসন্ধানের জন্য। কিন্তু ফল হয় নির্মম। পাকিস্তান সেনা সেই দলের সকলকে হত্যা করে। নড়ে চড়ে ওঠে ভারতের নর্থ ব্লক। শুরু হয় কার্গিল যুদ্ধ। একের পর এক পাকিস্তানের হামলার জবাব দিতে থাকে ভারত। শুরু হয় অপারেশন বিজয়।
Also Chek : গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অভিযান | গুরুত্বপূর্ণ সেনা অপারেশন – PDF
কার্গিল বিজয় দিবস কেন পালন করা হয়?
হাজার প্রতিকূলতা সত্বেও ভারতীয় সেনার সাহসিকতা, পরিশ্রম, নিষ্ঠা , ত্যাগ ২৬শে জুলাই কার্গিল শিখর দখল করে নেয়। হাজারো সেনার প্রাণের বিনিময়ে কার্গিল শিখরে ওদের ভারতীয় পতাকা। ভারতীয় সেনাদের এই ত্যাগ ও সাহসিকতাকে সম্মান জানাতে প্রতিবছর কার্গিল বিজয় দিবস পালন করা হয় ।
তবে এই যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান কিছু দুই দেশেরই সীমাহীন। এই লড়াইয়ে অফিসিয়াল তথ্য অনুযায়ী ভারতের ৫৭৩ জন জওয়ান শহীদ হন। আহত হন প্রায় ১ হাজার ৩৬৩ জন। দুই লক্ষেরও বেশি ভারতীয় সেনা এই অপারেশন বিজয় এ অংশগ্রহণ করেছিল। শুধু কার্গিলেই মোয়াতেন ছিল প্রায় ৩০ হাজার সেনা।
পাকিস্তানের ক্ষয় ক্ষতিও কিন্তু এই যুদ্ধে কম হয়নি। পাকিস্তানের অফিসিয়াল তথ্য অনুযায়ী প্রায় ৩৭৩ জন পাকিস্তান সেনা এই যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছিলেন। কিন্তু ভারতীয় সেনার তদন্তে উঠে আসে তিন হাজারেরও বেশি পাকিস্তানী সেনা এই যুদ্ধে প্রায় হারায়।
কার্গিল যুদ্ধে ভারতীয় বিমানবাহিনীর অপারেশন সফেদ সাগর -আর ভূমিকা ছিল অপরিসীম। কার্গিলের মতন দুর্গম ও উচ্চ শিখর দখল করতে ভারতীয় বিমান গুলিকে ৩২ হাজার ফুটের ওপর থেকে যুদ্ধ করতে হয়েছিল। উচ্চতা এতই বেশি ছিল যে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত পাইলটেরও দম বন্ধ হয়ে মারা যাবার পূর্ণ সম্ভাবনা ছিল।
এই যুদ্ধে আড়াই লক্ষেরও বেশি গোলাগুলি ও রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ওপরে এটি ছিল অন্যতম একটি যুদ্ধ যেখানে এক দেশ অন্য দেশে এতো বেশি গোলাগুলি করেছিল।
কার্গিল শিখর দখলের পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ী ১৯৯৯ সালের ২৬শে জুলাই এই যুদ্ধের ইতি ঘোষণা করেন। আধুনিক ভারতের ইতিহাসের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও স্ট্র্যাটেজিক যুদ্ধ ছিল এই কার্গিলের যুদ্ধ।
এরকম আরও কিছু পোস্ট :
গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস তালিকা – Important Days – PDF Download
ভারতের বিভিন্ন জাতীয় দিবস ও তার গুরুত্ব – PDF
To check our latest Posts - Click Here