NotesGeneral Knowledge Notes in Bengali

উদ্ভিদের ট্রপিক চলন, ট্যাকটিক চলন এবং ন্যাস্টিক চলন এর মধ্যে পার্থক্য

Difference between Tactic, Tropic and Nastic movement

1.7/5 - (8 votes)

উদ্ভিদের ট্রপিক চলন, ট্যাকটিক চলন এবং ন্যাস্টিক চলন এর মধ্যে পার্থক্য

বন্ধুরা আজ আমরা জেনে নেবো উদ্ভিদের চলন সম্পর্কে, অর্থাৎ ট্যাকটিক, ট্রপিক ও ন্যাস্টিক চলনের সম্পর্কে কিছু তথ্য ও তাদের মধ্যে পার্থক্য। উদ্ভিদের ট্রপিক চলন, ট্যাকটিক চলন এবং ন্যাস্টিক চলন এর মধ্যে পার্থক্য – Difference between Tactic, Tropic and Nastic movement ।

আরও দেখে নাও : সালোকসংশ্লেষ সম্পর্কিত কিছু তথ্য । Photosynthesis

উদ্ভিদের চলন :

  • যে পদ্ধতির মাধ্যমে কোনো জীব নিজের স্থান পরিবর্তন না করে অর্থাৎ নির্দিষ্ট স্থানে স্থির থেকে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বা উদ্দীপকের সাহায্যে নিজের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঞ্চালন করে, তাকে চলন বলে। 
  • উদ্ভিদ নিজের জায়গা থেকে নড়াচড়া করতে পারেনা অর্থাৎ গমনে অক্ষম কিন্তু বিভিন্ন উদ্দীপকের সাহায্যে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সঞ্চালন করতে পারে। 

আরও দেখে নাও : প্রাণী ও উদ্ভিদের শ্বাসযন্ত্র তালিকা – List of Respiratory Organs

উদ্ভিদের চলন কয় প্রকার ও কি কি?

উদ্ভিদের চলনগুলিকে মূলত ৩ ভাগে ভাগ করা হয়। যথা – 

  • ট্রপিক চলন 
  • ট্যাকটিক চলন 
  • ন্যাস্টিক চলন 

আরও দেখে নাও : উদ্ভিদ রাজ্যের শ্রেণীবিন্যাস- Classification of Plant Kingdom

ট্রপিক চলন :

যেক্ষেত্রে উদ্দীপকের উৎস বা গতিপথের দিকে উদ্ভিদে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের চলন দেখা যায় তাকে ট্রপিক চলন বলে। 

উদাহরণ : সূর্যের আলোর দিকে উদ্ভিদের বেঁকে যাওয়া, জলপ্রবাহের দিকে মূলের বৃদ্ধি ইত্যাদি। 

ট্রপিক চলনকে আবার ৩ ভাগে ভাগ করা যায়, যথা – হাইড্রোট্রপিক (যেখানে উদ্দীপক জল), ফটোট্রপিক (উদ্দীপক আলো) ও জিওট্রপিক (উদ্দীপপক মার্ধ্যাকর্ষণ)। 

আরও দেখে নাও : উদ্ভিদ ও প্রাণীকোষের পার্থক্য

ট্যাকটিক চলন : 

বিভিন্ন বহিস্থ উদ্দীপকের প্রভাবে উদ্ভিদ বা উদ্ভিদ-অঙ্গের স্থান পরিবর্তনের ঘটনাকে ট্যাকটিক বা আবিষ্ট চলন বলে। 

উদাহরণ : ক্লামাইডোমোনাস ভলভক্সের মতো কিছু শৈবালের এই ধরণের চলন দেখা যায়। 

এই ক্ষেত্রে উদ্ভিদ বা উদ্ভিদঙ্গের সামগ্রিক স্থান পরিবর্তন হতে দেখা যায় উদ্দীপকের প্রভাবে। 

ট্যাকটিক চলনকে আবার ৪ ভাগে ভাগ করা যায় যথা, – ফটোট্যাকটিক, থের্মোট্যাকটিক (উদ্দীপক তাপ), কেমোট্যাকটিক (উদ্দীপক রাসায়নিক পদার্থ) ও হাইড্রোট্যাকটিক। 

ন্যাস্টিক চলন :

যে উদ্ভিদ-চলন উদ্দীপকের উৎস বা গতিপথ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত না হয়ে উদ্দীপকের তীব্রতা দ্বারা নিয়ন্ত্ৰত হয় তাকে ন্যাস্টিক চলন বা ব্যাপ্তি চলন বলে। 

উদাহরণ : 

  • লজ্জাবতী গাছের পাতা স্পর্শ করলেই নুইয়ে পরে (উদ্দীপক – স্পর্শ, এক্ষেত্রে স্পর্শের তীব্রতার দ্বারা চলন নিয়ন্ত্রিত হয়)। 
  • টিউলিপ ফুলের পাঁপড়ি কম উষ্ণতায় মুদে যায় ও বেশি উষ্ণতায় ফুটে ওঠে (উদ্দীপক – তাপ, এক্ষেত্রে তাপের তীব্রতা দ্বারা চলন নিয়ন্ত্রিত হয়)। 

ন্যাস্টিক চলন আবার ৪ প্রকারের হয়, যথা – কেমোন্যাস্টিক, থার্মোন্যাস্টিক, সিসমোন্যাস্টিক (উদ্দীপক – স্পর্শ), ফটোন্যাস্টিক। 

ট্রপিক, ট্যাকটিক ও ন্যাস্টিক চলনের পার্থক্য (তুলনামূলক আলোচনা) :

বিষয় : স্থান পরিবর্তন 

  • ট্রপিক চলন : ট্রপিক চলনের ক্ষেত্রে উদ্ভিদের কোনো স্থান পরিবর্তন হয়না। 
  • ট্যাকটিক চলন : ট্যাক্টিক চলনের ক্ষেত্রে উদ্ভিদের স্থান পরিবর্তন হয়। 
  • ন্যাস্টিক চলন : ন্যাস্টিক চলনের ক্ষেত্রেও উদ্ভিদের স্থান পরিবর্তনের কোনো ঘটনা পরিলক্ষিত হয়না। 

বিষয় : উদ্দীপকের প্রতিক্রিয়া

  • ট্রপিক চলন : এই চলন উদ্দীপকের উৎস বা গতিপথ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। 
  • ট্যাকটিক চলন : এই চলন উদ্দীপকের উৎস, গতিপথ ও তীব্রতা উভয় দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতে পারে। 
  • ন্যাস্টিক চলন : এক্ষেত্রে উদ্ভিদের চলন নিয়ন্ত্রিত হয় উদ্দীপকের তীব্রতার দ্বারা। 

বিষয় : প্রকারভেদ 

  • ট্রপিক চলন : ট্রপিক চলনকে সাধারণত ফটোট্রপিক, হাইড্রোট্রপিক জিওট্রপিক ইত্যাদি ভাগে ভাগ করা হয়। 
  • ট্যাকটিক চলন : ট্যাকটিক চলনকে তেমন মূলত ফটোট্যাকটিক, থের্মোট্যাকটিক, কেমোট্যাকটিক হাইড্রোট্যাক্টিক এই ৪ ভাগে ভাগ করা যায়। 
  • ন্যাস্টিক চলন : ন্যাস্টিক চলনকে ভাগ করা যায় কেমোন্যাস্টিক, থার্মোন্যাস্টিক, সিসমোন্যাস্টিক ফটোন্যাস্টিক এই ৪ ভাগে। 

বিষয় : হরমোনের প্রভাব 

  • ট্রপিক চলন : এই চলনের ক্ষেত্রে হরমোনের গুরুত্ব আছে, যেমন – অক্সিন হরমোনের প্রভাবে উদ্ভিদ সূর্যালোকের দিকে বেঁকে যায়। 
  • ট্যাকটিক চলন : এই চলন হরমোনের দ্বারা প্রভাবিত হয়না। 
  • ন্যাস্টিক চলন : এই চলনও ট্রপিক চলনের মতো হরমোনের দ্বারা প্রভাবিত হয়। 

বিষয় : চলনের প্রকৃতি  

  • ট্রপিক চলন : ট্রপিক চলন একধরণের বক্র চলন। 
  • ট্যাকটিক চলন : ট্যাকটিক চলন একধরণের সামগ্রিক চলন। 
  • ন্যাস্টিক চলন : এই চলনও একধরণের বক্র চলন। 

বিষয় : চলনের গতি 

  • ট্রপিক চলন : ট্রপিক চলনের গতি খুব কম। 
  • ট্যাকটিক চলন : ট্যাকটিক চলনের গতি তুলনামূলক ভাবে বেশি। 
  • ন্যাস্টিক চলন : ন্যাস্টিক চলনের গতিও ট্রপিক চলনের তুলনায় অনেক বেশি। 

বিষয় : উদাহরণ 

  • ট্রপিক চলন : সূর্যালোকের দিকে উদ্ভিদের হেলে যাওয়া, মার্ধ্যাকর্ষণের বিপরীতে উদ্ভিদ-কাণ্ডের বৃদ্ধি। 
  • ট্যাকটিক চলন : আলোর দিকে শৈবালের চলন, অধিক তাপমাত্রা থেকে নিম্ন তাপমাত্রার দিকে শৈবালের চলন। 
  • ন্যাস্টিক চলন : পতঙ্গের সংস্পর্শে আসা মাত্রই সূর্যশিশির উদ্ভিদের পাতার কর্ষিকা বেঁকে গিয়ে পতঙ্গকে আবদ্ধ করে, স্পর্শের ফলে লজ্জাবতী গাছ নুইয়ে পরে। 

To check our latest Posts - Click Here

Telegram

Related Articles

Back to top button
error: Alert: Content is protected !!
উপগ্রহের সংখ্যায় শনিকে ছাড়িয়ে গেলো বৃহস্পতি। ১০০টি বিজ্ঞানের প্রশ্ন ও উত্তর UNSC দ্বারা বৈশ্বিক সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত হলেন আবদুল রহমান মক্কি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস সম্পর্কিত ১০টি তথ্য Nobel 2022 Winner List in Bengali