NotesGeneral Knowledge Notes in Bengali

বিশ্ব মৌমাছি দিবস – ২০শে মে – World Bee Day

World Bee Day - 20th May

বিশ্ব মৌমাছি দিবস – ২০শে মে – World Bee Day

আজ ২০শে মে। প্রতিবছর এই দিনটিতে পালিত হয় বিশ্ব মৌমাছি দিবস

আজকের দিনে ১৭৩৪ সালে জন্মেছিলেন অ্যান্টন জনসা। স্লোভেনীয় মৌমাছি পালক অ্যান্টন জনসাকে আধুনিক মৌমাছি পালনের জনক বলেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। তাঁর জন্মদিনটিকেই বিশ্ব মৌমাছি দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে।

২০১৮ সাল থেকে জাতিসংঘের উদ্যোগে প্রতিবছর ২০শে মে বিশ্ব মৌমাছি দিবস পালন করা হয়ে থাকে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছর অগাস্ট মাসের তৃতীয় শনিবার জাতীয় মৌমাছি দিবস পালন করে থাকে।

২০২১ সালের বিশ্ব মৌমাছি দিবসের থিম – “Bee Engaged : Build Back Better for Bees”.

আজ বিশ্ব মৌমাছি দিবসে দেখে নিয় মৌমাছি সম্পর্কিত কিছু তথ্য –

মৌমাছি এক প্রকার ক্ষুদ্র, উপকারী ও পরিশ্রমী পতঙ্গ। দলবদ্ধ ভাবে বাস করে এদেরকে ‘সামাজিক পতঙ্গ’ বলা হয়ে থাকে। নানাবিধ গুণসম্পন্ন মধুর জন্য আমরা মৌমাছির কদর করে থাকলেও মৌমাছির আসল গুরুত্ব কিন্তু সেটি নয়। মৌমাছির সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ অবদান হলো ফুলের পরাগসংযোগ ঘটানো। পরাগসংযোগের মাধ্যমে মৌমাছি বনজ, ফলদ ও কৃষিজ ফসলের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। মৌমাছির মাধ্যমে সফল পরাগায়ন সম্ভব এটি সর্বজনস্বীকৃত। ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়ানোর সময় মৌমাছিরা তাদের পা এবং বুকের লোমে ফুলের অসংখ্য পরাগরেণু বয়ে বেড়ায়। এক ফুলের পরাগরেণু অন্য ফুলের গর্ভমুণ্ডে পড়লে পরাগায়ন ঘটে, যার ফলশ্রুতিতে উৎপন্ন হয় ফল। পরাগসংযোগের মাধ্যমে প্রকৃতিতে ভারসাম্য বজায় রাখে মৌমাছি।

মৌমাছি পালন সংক্রান্ত্র বিদ্যাকে  এপিকালচার (Apiculture ) বলা হয়ে থাকে। 

আকার ও কাজের ভিত্তিতে মৌমাছিরা তিন সম্প্রদায়ে বিভক্ত:

  1. রাণী মৌমাছি যা একমাত্র উর্বর মৌমাছি
  2. ড্রোন বা পুরুষ মৌমাছি
  3. কর্মী মৌমাছি বা বন্ধ্যা মৌমাছি

রাণী মৌমাছি সবচেয়ে বড় প্রকৃতির। একটি চাকে একটি মাত্র রাণী মৌমাছি থাকে। রাণী মৌমাছির একমাত্র কাজ ডিম পাড়া। পুরুষ মৌমাছি মধ্যম আকৃতির ও এদের চোখ বড়। কিন্তু এদের হুল নেই। এদের একমাত্র কাজ রাণীর সাথে মিলিত হওয়া। শ্রমিক মৌমাছি সবচেয়ে ক্ষুদ্রাকৃতির। এদের চোখ ছোট, কিন্তু হুল আছে। রাণী ও পুরুষ বাদে অবশিষ্ট সকল সদস্যই শ্রমিক মৌমাছি। এরা নানা দলে ভাগ হয়ে চাকের যাবতীয় কাজ (যথা- চাক নির্মাণ করা, ফুলের মিষ্টি রস ও পরাগরেণু সংগ্রহ করা, মধু তৈরি করা, চাকের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা, চাকে বাতাস দেয়া চাক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ইত্যাদি) সম্পন্ন করে।

ভারতে সাধারণত যে ধরণের মৌমাছি দেখা যায় সেটি হলো – এপিস ইন্ডিকা । এবছর ভারতে অল্প পরিমানে পাহাড়ি মোমাছি ( Apis dorsata), ক্ষুদে মৌমাছি (Apis florata ), ইউরোপিয় মৌমাছি (Apis mellifera ) দেখে পাওয়া যায়। ভারতের কেরালা রাজ্যে এক প্রকার বিশেষ মৌমাছি লক্ষ্য করা যায় যাদের বলা হয় “হুলবিহীন মৌমাছি”। এরা আদৌ হুলবিহীন নয়, প্রকৃতপক্ষে এদের হুল পূর্ণ বিকশিত হয় না৷

মৌমাছির হুলে থাকে ফরমিক অ্যাসিড। এই অ্যাসিড থাকার কারণেই মৌমাছি কামড়ে দিলে ( হুল ফুটিয়ে দিলে ) জ্বালা করে। 

আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে মৌমাছির গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু ধীরে ধীরে এই মৌমাছিরা বিলুপ্তির দিকে চলেছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পৃথিবীতে মানুষের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে মৌমাছিকেও বাঁচিয়ে রাখতে হবে। বৃক্ষচ্ছেদন, অনিয়ন্ত্রিত কীটনাশকের ব্যবহার, মধুর জন্য মৌচাকের ধ্বংস, মৌমাছির শরীরে প্যারাসাইট মাইট আক্রমণ ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে মৌমাছি জাতি আজ বিপন্ন।

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে, গাছগাছালির বংশবৃদ্ধি এবং মানুষের খাদ্য সরবরাহ ঠিক রাখতে মৌমাছিকে লুপ্ত হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে হবে। অন্যথায় নিকট ভবিষ্যতে মানুষের অস্তিত্বও এই গ্রহে বিপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

আরও দেখে নাও :

To check our latest Posts - Click Here

Telegram

Related Articles

Back to top button