General Knowledge Notes in BengaliHistory Notes

বাংলার নবাব তালিকা ও তথ্য – Nawabs of Bengal Bengali – PDF

List of Nawabs of Bengal PDF in Bengali

বাংলার নবাব তালিকা ও তথ্য

প্রিয় পাঠকেরা, আজকে আমরা আলোচনা করবো বাংলার নবাব তালিকা নিয়ে। পশ্চিমবঙ্গের যে কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি টপিক। কিন্তু পাঠ্য বইগুলিতে এই টপিকটি অনেকটাই উপেক্ষিত। তাই আমরা চেষ্টা করেছি বাংলার বিভিন্ন নবাবগণ ও তাদের সংশ্লিষ্ট তথ্য এই পোস্টের মাধ্যমে তোমাদের সামনে তুলে ধরতে।

মুর্শিদকুলি খাঁ (১৭১৭ – ১৭২৭ খ্রিস্টাব্দ )

মুর্শিদকুলি খাঁ বাংলার প্রথম নবাব ছিলেন।

তিনি এক ওড়িয়া দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

পারস্যের এক বণিক ইসফাহান তাকে ক্রয় করে ইসলাম ধর্মে স্থানান্তরিত করেন এবং নাম পরিবর্তন করে মুহাম্মদ হাদী বা মির্জা হাদী রাখেন।

১৭০০ খ্রিস্টাব্দে মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব মুর্শিদকুলি খাঁকে বাংলার দেওয়ান নিযুক্ত করেন।

পরবর্তীকালে ফারুকসিয়ার তাকে ১৭১৩ সালে বাংলার নাইব সুবেদার (ডেপুটি গভর্নর ) এবং ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে সুবেদার (গভর্নর ) হিসেবে নিযুক্ত করেন।

১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি তার রাজধানী ঢাকা থেকে মুর্শিদাবাদে স্থানান্তর করেন এবং ধীরে ধীরে বাংলায় নিজের শাসন কায়েম করেন। মুর্শিদাবাদ শহরটির নামকরণ করেছিলেন তিনি তার নিজের নামে।

১৭১৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি ওড়িশারও সুবেদার পরে নিযুক্ত হন।

তিনি বাংলায় বিদ্রোহী জমিদারদের দমন করেন এবং সারা বাংলা জুড়ে আইনের শাসন জারি করেন।

বৃদ্ধাবস্থায় মুর্শিদকুলি খাঁ ইচ্ছা প্রকার করেন তার সমাধি কোন মসজিদের পশে হক। সেই মতো মুর্শিদাবাদে নির্মিত হয় কাটরা মসজিদ এবং এই মসজিদে ওঠার সিঁড়ির নিচে মুর্শিদকুলি খাঁকে সমাধিস্থ করা হয়।

দেখে নাও : ভারতের গভর্নর জেনারেল তালিকা ও তথ্য – PDF

সুজাউদ্দীন (১৭২৭ – ১৭৩৯ খ্রিস্টাব্দ )

সুজাউদ্দীন ছিলেন মুর্শিদকুলি খাঁর জামাতা। তিনি মুর্শিদ কুলি খানের কন্যা জয়নব উন-নিসা বেগম ও আজমত উন-নিসা বেগমকে বিয়ে করেছিলেন।

১৭২৭ খ্রিস্টাব্দের ৩০শে জুন শ্বশুর মুর্শিদ কুলি খানের মৃত্যুর পরে তিনি নবাবের সিংহাসনে আরোহন করেন।

১৭৩৩ খ্রিস্টাব্দে মহম্মদ শাহকে বিহারের সুবেদার বা গভর্নর করে দেন। এর ফলে বাংলা, বিহার ও ওড়িশা সুজাউদ্দীনের শাসনের আওতায় চলে আসে।

১৭৩৯খ্রিস্টাব্দের ২৬শে আগস্ট সুজাউদ্দীন মৃত্যুবরণ করেন। মুর্শিদাবাদের রোশনিবাগে তাকে সমাধিস্থ করা হয়।

দেখে নাও : ভারতের গভর্নর জেনারেল তালিকা ও তথ্য – PDF

সরফরাজ খান (১৭৩৯ – ১৭৪০ খ্রিস্টাব্দ )

১৭৩৯ খ্রিস্টাব্দে পিতার মৃত্যুর পরে সরফরাজ খান আলাউদ্দিন হাইদার জং উপাধি ধারণ করেন এবং বাংলা, বিহার ও ওড়িশার নবাবের পদ ধারণ করেন।

তার শাসনকালে নাদির শাহ দিল্লি আক্রমণ করেন।

বিহারের ডেপুটি গভর্নর আলীবর্দী খাঁ সরফরাজ খানকে একরকম করে দেন। আলীবর্দী খানের নিপুন রণকৌশলের কাছে সরফরাজের সেনাবাহিনী পরাজিত হয়। ভাগীরথী নদীর তীরে গিরকার যুদ্ধে সরফরাজ খান গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রয়াত হন।

সরফরাজ খান মৃত্যুর সময় পাঁচ পুত্র ও পাঁচ কন্যা রেখে যান যারা কখনো ক্ষমতা গ্রহণ করতে পারেন নি। আলীবর্দী খাঁ বাংলার নবাব হিসেবে অভিষিক্ত হন ও একই সাথে মুর্শিদ কুলির নাসিরি রাজবংশের পতন ঘটে।

আলীবর্দী খাঁ (১৭৪০ – ৫৬ খ্রিস্টাব্দ )

আলীবর্দী খাঁ একজন অসমসাহসী ও রণনিপুণ সেনাপতি এবং কর্মদক্ষ ও দূরদর্শী শাসক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

আলীবর্দী খানের প্রকৃত নাম মির্জা মুহম্মদ আলী ।

৭০ বছর বয়সে তিনি সরফরাজ খানকে পরাজিত করে বাংলা, বিহার ও ওড়িশার নবাবে পরিণত হন।

মুঘল সম্রাট মহম্মদ শাহ এর কাছ থেকে দুই কোটি টাকার বিনিময়ে একটি ফরমান লাভ করেন যার বিনিময়ে তিনি যথেচ্ছ কর আদায় করার ক্ষমতা পান।

আলীবর্দী খাঁ -এর সময়ে ক্রমাগত মারাঠা আক্রমণ হতে থাকে এবং তিনি ১৭৫১ খ্রিস্টাব্দে তাদের সাথে (রঘুজী ভোঁসলে ) শান্তি চুক্তি করেন বার্ষিক ১২ লক্ষ টাকার চৌথ কর দিয়ে।

১৭৪৮ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশরা বাংলায় আর্মেনীয় ও মুঘল বণিকদের কয়েকটি জাহাজ আটক করলে আলীবর্দী খাঁ ইংরেজ বণিকদের বাণিজ্যিক সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করে দেন। বাধ্য হয়ে ইংরেজরা জাহাজগুলি ছেড়ে দেয় এবং দেড় লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য হয়।

কলকাতা এবং চন্দননগরে তিনি ফরাসিদের ফ্যাক্টরি স্থাপনের ব্যবস্থা করে দেন।

দীর্ঘদিন যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত থাকার দরুন আলীবর্দীর স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পড়েছিল। ১৭৫৬ সালের ১০ এপ্রিল তিনি মুর্শিদাবাদে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন[৫]। বর্তমান ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুর্শিদাবাদের খোশবাগে তার সমাধি অবস্থিত।

সিরাজ-উদ-দৌলা (১৭৫৬ – ৫৭ )

সিরাজউদ্দৌলা তাঁর নানা নবাব আলীবর্দী খানের কাছ থেকে ২৩ বছর বয়সে ১৭৫৬ সালে বাংলার নবাবের ক্ষমতা অর্জন করেন। তিনি ছিলেন আলীবর্দী খাঁ এর কনিষ্ঠা কন্যা আমেনা বেগমের সন্তান।

সিরাজউদ্দৌলা যখন সিংহাসনে বসেন তখন ইংরেজদের আধিপত্য ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। অপরদিকে সিরাজের মাসতুতো ভাই সৌকত জং ও তার মা ঘসেটি বেগম গোপনে সিরাজের বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত হয়। সিরাজের এই গৃহবিবাদের সুযোগ নিয়ে ইংরেজরা উদ্ধত স্বভাবের পরিচয় দিতে থাকে এবং ইংরেজদের সাথে সিরাজের তিক্ততা ক্রমশ বাড়তে থাকে।

ফোর্ট উইলিয়াম দখল

ইংরেজদের শিক্ষা দেবার উদ্দেশ্যে সিরাজ ১৭৫৬ খ্রিস্টাব্দের ৪ই জুন কাশিমবাজার কুঠি দখল করেন এবং ২০শে জুন কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ দখল করে নেন।

অন্ধকূপ হত্যা

বলা হয় যে ২০শে জুন নবাবের হাতে বন্দি ১৪৬জন ইংরেজদের নবাব একটি অতি ক্ষুদ্র কক্ষে বন্দী করে রাখেন এবং এর ফলে ১২৩ জন বন্দী মারা যান। এই ঘটনা অন্ধকূপ হত্যা (Black Hole ট্রাজেডি ) নামে পরিচিত। যদিও পরবর্তীকালে প্রমান হয় যে এই ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যে এবং হলওয়েল নামক এক জনৈক ইংরেজ পদস্থ কর্মচারীর কল্পনাপ্রসূত।

কলকাতা দখলের পর সিরাজ আলীবর্দী খান এর নামানুসারে কলকাতার নাম রাখেন আলিনগর এবং মানিকচাঁদকে কলকাতার শাসনকর্তা নিযুক্ত করে তিনি মুর্শিদাবাদে ফিরে আসেন।

অলিনগরের সন্ধি

কলকাতায় ও কাশিমবাজারে তাদের পতনের খবর শুনে ক্লাইভ, এডমিরাল ওয়াটসনের নেতৃত্বে কলকাতা পুনরুদ্ধারের জন্য নৌযাত্রা শুরু করেন এবং সিরাজের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হন। এর ফলে সিরাজ ইংরেজদের সাথে অলিনগরের সন্ধি স্বাক্ষর করলে বাধ্য হন এবং এই সন্ধির ফলে ইংরেজদের প্রভাব-প্রতিপত্তি বহুল পরিমানে বৃদ্ধি পায়।

ইংরেজদের চন্দননগর দখল

দাক্ষিণাত্যে তৃতীয় কর্ণাটকের যুদ্ধের সুযোগে নবাবের প্রতিবাদ অগ্রাহ্য করে ক্লাইভ চন্দননগরের ফরাসি ঘাঁটি দখল করে নেন ২৩শে মার্চ, ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে। এই ভাবে ক্লাইভ ইংরেজদের প্রতিদ্বন্ধি ফরাসিদের ধ্বংস করেন এবং নবাবের সাথে ফরাসিদের মৈত্রীর সম্ভাবনা দূর করেন। ফরাসিরা পরাজিত হয়ে মুর্শিদাবাদে আশ্রয় নেয়।

সিরাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

জগৎশেঠ, রাজবল্লভ, রায়দুর্লভ, উমিচাঁদ, মীরজাফর, ইয়ার লতিফ প্রমুখেরা সিরাজকে সিংহাসন থেকে অপসারিত করার জন্য চক্রান্ত শুরু করেন। তাঁদের আহ্বানে ক্লাইভ ও এই ষড়যন্ত্রে যোগ দেন। ঠিক হয় সিরাজকে প্রতিসারিত করে মীরজাফর সিংহাসনে বসবেন এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে আরও সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে।

পলাশীর যুদ্ধের প্রকৃত কারণ

ঐতিহাসিক বিজেন গুপ্তের মতে ঐশ্বর্য ও ক্রমবৃদ্ধিমান ক্ষমতার মোহে আচ্ছন্ন হয়ে ইংরেজ কোম্পানি সাম্রাজ্যবাদী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়ে পরে এবং পলাশীর যুদ্ধ শুরু হয়ে। অপরদিকে ঐতিহাসিক হিল (Hill ) এর মতে পলাশীর যুদ্ধের জন্য দায়ী ছিল নবাবের অহংকার ও লোভ এবং নবাবের প্রকৃত লক্ষ্য ছিল কোম্পানির অর্থ লুন্ঠন করা।

পলাশীর যুদ্ধ

১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন মুর্শিদাবাদের ২৩ মাইল দূরে পলাশীর প্রান্তরে সিরাজদৌল্লা ও ইংরেজ বাহিনীর যুদ্ধ বাঁধে। ইংরেজদের নেতৃত্বে ছিলেন রবার্ট ক্লাইভ। সিরাজের বিশাল সেনা থাকলেও মীরজাফর, রায়দুর্লভ, ইয়ার লতিফ প্রমুখ সিরাজের সেনাপতিরা যুদ্ধে বিশ্বাঘাতকতা করেন এবং পুতুলের মত দন্ডায়মান থাকেন। সেনাপতি মিরমদন ও মোহনলাল যুদ্ধক্ষেত্রে প্রায় দেন। মীরজাফরের চরম বিশ্বাসঘাতকতায় নবাব বাহিনী ছত্রভঙ্গ হয়ে পরে। সিরাজ পলায়ন করেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁকে বন্দি করে মুর্শিদাবাদে নিয়ে আসা হয় এবং সেখানে মিরনের এদেশে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

দেখে নাও : গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক যুদ্ধ ও সাল তালিকা – PDF | Important Wars

পলাশীর যুদ্ধের ফলাফল

  • পলাশীর যুদ্ধের পর ব্রিটিশরা মীরজাফরকে বাংলার সিংহাসনে বসান। কিন্তু তিনি ইংরেজদের হাতের পুতুলে পরিনত হন।
  • যুদ্ধে জয়লাভের পর ইংরেজরা বিনাশুল্কে বাংলায় ব্যবসা-বাণিজ্য করতে থাকে।
  • ইংরেজরা মীরজাফরকে নানাভাবে আর্থিক শোষণ করতে থাকে।
  • বাংলার অমিত ঐশ্বর্য ব্যবহার করে ইংরেজরা দক্ষিণ ভারতে ফরাসিদের পরাজিত করে।

পলাশীর যুদ্ধ নিয়ে আমরা পরে আরও বিস্তারিত আলোচনা করবো এবং সম্পূর্ণ আলাদা একটি নোট সাইটে প্রকাশ করা হবে শুধুমাত্র পলাশীর যুদ্ধ নিয়ে।

মীরজাফর (১৭৫৭ – ১৭৬০ )

পলাশীর যুদ্ধের পর ইংরেজ কোম্পানি, লর্ড ক্লাইভ ও কোম্পানির অন্যান্য উচ্চ-পদস্থ কর্মচারীদের প্রচুর অর্থ উপঢৌকন দিয়ে মীরজাফর মুর্শিদাবাদের মসনদে বসেন। কিন্তু তিনি ছিলেন দুর্বলচিত্ত ও অদক্ষ ।

বিহারের দেওয়ান রামনারায়ণ, মেদিনীপুরের শাসনকর্তা রামরাম সিংহ এবং পূর্ণিয়ার শাসনকর্তা হাজির আলি—
সকল প্রভাবশালী হিন্দুদের কাছে তিনি নিজেকে শত্রুভাবাপন্ন করে তোলেন।

সৈন্যদের নিয়মিত বেতন প্রদান করতে ব্যর্থ হন। মিরজাফর সর্ব বিষয়ে কোম্পানির উপর নির্ভরশীল হয়ে
পড়ে।

দেখে নাও : ভারতের ঐতিহাসিক সন্ধি ও চুক্তি তালিকা – PDF

পরবর্তীকালে লর্ড ক্লাইভের উদ্ধত আচরণ, নানা ভাবে অর্থশোষণ এবং নবাবের প্রতি অসম্মানের জন্য মীরজাফর ক্লাইভের ওপর বিরক্ত হন। ইংরেজ বণিকদের ক্ষমতা খর্ব করার জন্য তিনি ওলন্দাজদের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। এই সংবাদ পেয়ে ক্লাইভ বিদারার যুদ্ধে ( 1759 সালে) ওলন্দাজদের পরাজিত করেন।

১৭৬০ সালে ক্লাইভ স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করলে তাঁর স্থলে ভ্যান্সিটার্ট গভর্নর নিযুক্ত হন। ভ্যান্সিটার্ট ক্লাইভের মতো দক্ষ প্রশাসক ছিলেন না। ওলন্দাজদের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগে ভ্যান্সিটার্ট মিরজাফরকে সরিয়ে তাঁর জামাতা মিরকাশিমকে সিংহাসনে বসান (১৭৬০ সালে, অক্টেবর)। এই ঘটনাকে বলা যেতে পারে ‘Revolution of 1760‘ ।

মিরকাশিম (১৭৬০ – ১৭৬৩ )

ব্রিটিশ কোম্পানিকে বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে গোপন চুক্তির মাধ্যমে সিংহাসনে বসলেও মিরকাশিম ছিলেন
স্বাধীনচেতা নবাব।

রাজ্যের উন্নয়নের জন্য তিনি নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করেন , রাজস্ব সংগ্রহের জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, নবাবী দরবারের ব্যয় হ্রাস করেন, বিদ্রোহী জমিদারদের দমন করেন।

চুনিলাল, মনিলাল এবং অন্যান্য কর্মচারীদের উৎখাত করেন। গোলন্দাজ বাহিনীর প্রধান হিসাবে নিযুক্ত করেন গ্রেগরিকে।

মিরকাশিম তাঁর রাজধানী মুর্শিদাবাদ থেকে বিহারের মুঙ্গেরে স্থানান্তরিত করেন। সেনাবাহিনীর বিভিন্ন দায়িত্বে জেনটিল, মারক্যাট, সুমরু অ্যারাটুন প্রমুখ ইউরোপীয়কে নিয়োগ করা হয় ।

১৭১৭ সালের মোঘল সম্রাট ফারুকসিয়ারের ফরমান অনুযায়ী কোম্পানি বাংলাদেশে বিনাশুল্কে বাণিজ্যের অধিকার লাভ করে। কিন্তু কোম্পানি এই ফরমানের অপব্যবহার শুরু করে। এর ফলে একদিকে নবাব যেমন তাঁর বৈধ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হন, তেমনি ভারতীয় বণিকরা এই অসম প্রতিযোগিতায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পরে।

১৭৬৩ সালের ১৭ই মার্চ মিরকাশিম সমস্ত শ্রেণির অন্তর্বাণিজ্য শুল্ক তুলে দেবার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। নবাবের এই ঘোষণায় পাটনার ইংরেজ ফ্যাক্টরির প্রধান এলিস সাহেব উত্তেজিত হয়ে হঠাৎ পাটনা আক্রমণ করেন। নবাব পাটনা পুনর্দখল করে পাটনায় ইংরেজ কুঠি ধ্বংস করেন এবং এর ফলে ইংরেজদের সাথে নবাবের প্রকাশ্যে যুদ্ধ শুরু হয় (১৭৬৩ খ্রিস্টাব্দে )।

বক্সারের যুদ্ধ

  • সময় : ১৭৬৪ সালের ২২শে অক্টোবর।
  • কারণ : মিরকাশিমের স্বাধীনচেতা মনোভাব, শুল্ক বিবাদ।
  • স্থান : বক্সারের প্রান্তর।
  • ত্রিশক্তি জোট : ইংরেজদের বিরুদ্ধে ত্রিশক্তি জোট (মিরকাশিম, সুজাউদ্দৌলা ও দ্বিতীয় শাহ আলম)।
  • সৈন্য : নবাবের পক্ষে ছিল ৪০-৬০ হাজার সেনা এবং ইংরেজদের পক্ষে ছিল ৭০৭২ জন।
  • “ভারতের ইতিহাসে বক্সারের এই যুদ্ধটি ছিল সর্বাধিক যুগান্তকারী ও তাৎপর্যময়”– ডঃ বিপানচন্দ্ৰ ।

পলাশি ছিল কয়েকটি কামানের লড়াই, বক্সার ছিল চূড়ান্ত বিজয়।

ড: স্মিথ ।

বিস্তারিত তথ্য : বক্সারের যুদ্ধ ও বক্সারের যুদ্ধের গুরুত্ব

মীরজাফর (১৭৬৩ – ১৭৬৫ ) – দ্বিতীয়বার

মিরকাশিমের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ১৭৬৩ খ্রিস্টাব্দে কোম্পানি তাকে পদচ্যুত করে মীরজাফরকে (১৭৬৩ – ৬৫ ) পুনরায় বাংলার সিংহাসনে বসান। ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে মীরজাফরের মৃত্যুর পরে তার নাবালক পুত্র নজমউদ্দৌলা সিংহাসনে বসেন।

১৭৬৫ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারি চুক্তির মাধ্যমে নজমউদ্দৌলা কোম্পানির বৃত্তিভোগী পুতুলে পরিণত হয় এবং সামরিক ও প্রশাসনিক সমস্ত ক্ষমতা কোম্পানি দখল করে নেয়।

Download Section

  • File Name: বাংলার নবাব তালিকা ও তথ্য – Nawabs of Bengal – PDF – বাংলা কুইজ
  • File Size: 1.8 MB
  • No. of Pages: 07
  • Format: PDF
  • Subject: Indian History
  • Language: Bengali

To check our latest Posts - Click Here

Telegram

Related Articles

Back to top button